1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

কলেজ রেখে অধ্যক্ষ ব্যস্ত বিএনপির রাজনীতিতে: ক্রমশ খারাপ হচ্ছে মঈনুল হক কলেজের ফলাফল

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮, ৫.৫১ এএম
  • ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার::
২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ৬৪ ভাগ ফলাফল করেছিল সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঈনুল হক কলেজ। এবছর আরো ২০ ভাগ নিচে নেমে মাত্র ৪৬ ভাগ ফলাফল করেছে। ক্রমশ ফলাফল খারাপ হওয়ায় অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমানের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন অবিভাবকরা। অবিভাবকরা জানিয়েছেন অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী মিলে জবাবদিহীতা ছাড়াই কলেজ চালাচ্ছেন। তিনি ইচ্ছে মতো পরিচালনা কমিটি গঠন করেন, ইচ্ছেমতো ভাঙ্গেন। তাছাড়া সম্প্রতি তিনি কলেজ ফেলে সুনামগঞ্জ-৪ এলাকা থেকে বিএনপির মনোনয়নের জন্য জনসংযোগ করেছেন। জেলা বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে কলেজ ফেলে সময় দিতে দেখা যায়। তিনি জেলা জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ক্যাম্পাস ফেলে বিএনপির সক্রিয় রাজনীতে সময় দেওয়ায় এই কলেজের শিক্ষার মান ক্রমশ নিম্নমুখি হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে ফলাফলে।
জানা গেছে ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এই কলেজ থেকে ২২৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে পাশ করেছে মাত্র ১০৪ জন। পাশের হার ৪৬.০২। গতবার এই কলেজের পাশের হার ছিল ৬৪ ভাগ। ফলাফল খারাপের জন্য অধ্যক্ষ মতিউর রহমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করে বলেন, ‘সরকার টাকা না দেওয়ায় এমনটা হচ্ছে। ফলাফল খারাপ কেন আপনার কাছে জবাদিহী করব কেন, আপনি কে? এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ফলাফল কেন খারাপ হয়েছে শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞেস করুন। তিনি রাজনীতিতে সময় দিচ্ছেন না বললেও ফলাফল খারাপের কারণ জানতে চাওয়ায় তিনি ক্ষুব্দ হয়ে এই প্রতিবেদককে কে অধিকার দিয়েছেন এটা এই প্রশ্ন করার এমন ক্ষোভ ঝারেন।
জানা গেছে সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের জয়নগরবাজারে সুরমা নদীর তীরে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে ২০০৪ সনে এলাকার দাতা মঈনুল হক নিজ নামে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর জেলায় ভালো ফলাফল করে আসছিল। গত কয়েক বছর ধরে ফলাফল ক্রম অবনতি হচ্ছে। ক্রমশ পড়ালেখার মান খারাপ হওয়ায় এবং সঠিকভাবে কলেজ পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়ায় প্রতিষ্ঠাতা মঈনুল হকের বিপরিতে চলে যান অধ্যক্ষ। এ ঘটনায় গত বছর তিনি কোমলমতি ছাত্রদের দিয়ে ক্যম্পাসে প্রতিষ্ঠাতা মঈনুল হক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও মিছিল করিয়েছিলেন। তার এমন দুঃসাহসিক কা-ে স্থানীয় যুবলীগ প্রতিবাদ মিছিল করে অবিলম্বে তার শাস্তির দাবি করেছিল। এই ভিডিওটি এখনো এলাকার অনেকের কাছে সংরক্ষিত আছে। সুনামগঞ্জ জেলা শহরে বিএনপির সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচিতে বেশ সক্রিয় দেখা যায় অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে।
সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচিতে উপস্থিত অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের বিভিন্ন সময়ের ছবি ও জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দলের আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর পত্রিকা ও দলীয় প্যাডের প্রেসবিজ্ঞপ্তির প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।

কলেজে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোয় এলাকায় বিচার শালিস হলে ছাত্ররা ক্ষমা চেয়েছিল। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীমের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিচার শালিসে কলেজের গত একযুগের হিসেব নীরিক্ষার জন্য স্থানীয়দের দিয়ে একটি কমিটি গঠিত হলেও অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান হিসেব না দেখিয়ে ঠালবাহানা করছেন। তিনি বিচার শালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটি না করে জাতীয়তাবাদী আদর্শের সাবেক এক কলেজ উপাধ্যক্ষকে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন বলে অভিযোগ আছে। তাছাড়া সম্প্রতি কলেজের পুরো শিক্ষকদের একাই বদলি করে তার ইচ্ছে মতো নতুন ও অনভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন।
অবিভাবকদের অভিযোগ এসব কারণে কলেজে পড়ালেখার মান নিম্মমুখি হচ্ছে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ মতিউর রহমানকে প্রতিষ্ঠানে ফলাফলের ক্রম অবনতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাকে কে অধিকার দিয়েছে এ বিষয়ে কথা বলার। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞেস করুন কেন টাকা দেয়না। এভাবে আক্রমণাতœক বক্তব্য দেন সরকারের বিরুদ্ধে।
মোহনপুর গ্রামের সচেতন যুবক ও লেখক শামছুজ্জামান সায়েম বলেন, কলেজের সুনামটি দিনদিন নষ্ট করছেন অধ্যক্ষ। তিনি সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নের জন্য বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কলেজে সময় দিচ্ছেননা। কলেজ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মোহনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার এই কলেজটি অনেক সুনাম অর্জন করেছিল। এখন ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। অধ্যক্ষ মহোদয় কলেজে সময় দেওয়ার চেয়ে বিএনপির রাজনীতিতে সময় দিচ্ছেন বেশি।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাচনাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শামীম বলেন, আমরা এলাকাবাসীকে নিয়ে বিশাল শালিস করেছিলাম। শালিসে অধ্যক্ষের নানা ত্রুটি ধরা পড়েছিল। তিনি শালিসে ক্ষমা চেয়ে প্রতিষ্ঠাতা ও এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলে কলেজ পরিচালনা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। হিসেবের ব্যাপক গড়মিল থাকায় গত একদশকের হিসেব অডিট করার জন্য আমরা একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম। যতদূর জানি নানা ঠালবাহানায় অডিট করা হচ্ছেনা।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!