দিরাই প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দিরাই পৌর সদরে অবস্থিত একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠছে। সভাপতি কর্তৃক শিক্ষকাকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে পরিচালনা কমিটি স্থানীয় সাংসদ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে মেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবক মহল। অভিভাবকদের অনেকেই বলছেন বিদ্যালয়ের স্বার্থে সৃষ্ট ঘটনাকে সুরাহা না করে কতিপয় লোক বিদ্যালয়ের বাহিরে ভিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্রে জানাগেছে, বুধবার বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী অপি বেগম বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল হক মিয়ার দেওয়া টোকেন নিয়ে বেতন দিতে ক্লাস শিক্ষক তানজিলা সরকারের কাছে যান। তানজিলা সরকার বেতন কম হওয়ায় তা না রেখে ছাত্রী অপি বেগমকে বকাঝকা করে ফিরিয়ে দেন, শিক্ষপার্থী অপি বেগম এমন সময় সভাপতি আবদুল হক মিয়ার কাছে উপস্থিত হয়ে কান্নাকাটি করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাসরোমে গিয়ে শিক্ষক তানজিলার প্রতি চড়াও হন। সভাপতির এহেন আচরনে শিক্ষক তানজিলা চরম অপমানিত বোধ করেন। সভাপতির এমন আচরন শিক্ষকরাও ভাল চোখে দেখেননি। ঘটনার দিন প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে ত্যাৎক্ষনিক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লালবাসি দাসের উদ্যেগে শিক্ষকদের কমন রোমে বসে নিস্পত্তি করা হয়। কিন্তু পরদিন বৃহস্পতিবার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সভাপতির এহেন আচরনের দায়ে তাকে অপসারনের দাবী জানিয়ে দিরাইয়ে বিক্ষোভ ও স্থানীয় সাংসদ, ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের এবং শনিবার থানা রোডে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়। মানব বন্ধনে পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার ও জেলা পরিষদের সদস্য নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন। ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল হক, সদস্য পংকজ কান্তি দাস, নুরুল হক, মনোরঞ্জন চক্রবর্তী, এনামুল হক,ডলি রানী তালুকদার ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য সর্দার অভিযোগ করে বলেন,শিক্ষক তানজিলার সাথে সভাপতির সৃষ্ট ঘটনা বিদ্যালয়ে বসে সুরাহা করার পরও একটি মহল ষড়যন্ত্র করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসবর্জন করাতে বাধ্য করে তাদেরকে ব্যবহার করছেন, ব্যাক্তিস্বার্থে বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠায় বিদ্যালয়টি বর্তমানে জাতীয়করনের পথে, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির লোকজনের মধ্যে কাদাছুড়াছুড়ির কারনে বিদ্যালয়ের সুনামক্ষুন্য হোক তা কাম্য নয়, আমরা এর নিস্পত্তি চাই।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সহকারি কমিশনার ভুমি সাহিদুল আলম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে কি করনীয় রয়েছে তবে শিক্ষক- ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কারো কারনে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘœ হয় তা মেনে নেয়া যাবে না।