স্টাফ রিপোর্টার
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে জেলা কৃষক লীগের উদ্যোগে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল হয়েছে ।
মঙ্গলবার বিকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শোক দিবসের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শাহাদাৎবরণকারীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
জেলা কৃষক লীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির শান্তি মিয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব বিন্দু তালুকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি জাতি বিজয় অর্জন করেছিল। কিন্তু মোস্তাক চক্র শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে মন্ত্রী হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছিল। মোস্তাক চক্রই ওয়ান ইলিভেন সরকার ঘটন করেছিল। তারা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় করতে চেয়েছিল। বিশ্বাসঘাতক মোস্তাকদের চিহ্নিত করতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করতে হবে। শেখ হাসিনা বাঁচলে আমরা বাঁচব, শেখ হাসিনা না বাঁচলে আমরা কেউ বাঁচতে পারব না। আমরা সবাই শেখ হাসিনার পাশে থাকলে কেউ তার ক্ষতি করতে পারবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নেই। বারবার চেষ্টা করে যাচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করতে। আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বলেন, ‘খুনি মোস্তাক চক্র জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তার শিশু পুত্র রাসেলকে বাঁচতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর মাসুম শিশুপুত্র কি অপরাধ করেছিল? বঙ্গবন্ধুর ডাকে জেগে উঠেছিল বাঙালি। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। খুনিচক্র বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ রাখতে কালো আইন পাশ করেছিল। তারা চেয়েছিল এই দেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার একজন আইনজীবী হিসেবে আদালতে স্বাক্ষ্য গ্রহণের সময় শুনেছি, শিশু রাসেল বারবার বাবার কাছে যাওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু খুনিদের মন গলেনি। গুলি করে শিশু রাসেলকে হত্যা করা হয়েছিল। এই চক্র আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে বার বার অপচেষ্টা করছে। বার বার মৌলবাদী প্রেতাত্মারা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে বারবার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে খুনি তারেক জিয়া ও জামায়াত শিবির চক্র। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনে প্রশিক্ষিত বাহিনী নিয়োগ করেছিল। কোটা আন্দোলনে অর্থ দিয়েছিল খুনি তারেক জিয়া। কয়েকজন সুশীল-কুশীল ও অভিনেত্রীকে কোটি টাকা দিয়ে মিশনে নামানো হয়েছিল। সব ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়েছে। অভিনেত্রী নিজেই সব জানিয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন,‘ উন্নয়নের রাজনীতি অব্যাহত রাখতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শোককে শাক্তিতে রূপান্তরিত করে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুর রহমান সিরাজ, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ শামীম, দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল আজাদ রুমান, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহবায়ক জুনেদ আহমদ, গৌতম কুমার বণিক।
আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা কৃষক লীগের সদস্য অরুন চন্দ্র দে, তারেক মিয়া, ছালমা আক্তার চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম কালা মিয়া, দিরাই উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক তাজুল ইসলাম, জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আলী আমজাদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক ফয়জুর রহমান, সদর উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহবায়ক নজরুল ইসলাম, সদস্য সচিব মুহিবুর রহমান মুহিব, পৌর কৃষক লীগের আহবায়ক কল্লোল তালুকদার, যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির, তাহিরপুর উপজেলা কৃষক লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক খসরু ওয়াহিদ চৌধুরী, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কৃষক লীগের আহবায়ক হুমায়ুন কবির, যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাহার, জামালগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক আবু তাহের তালুকদার।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তান তৈরির চেষ্টা করছিল খন্দকার মোশতাক চক্র। পাকিস্তানী ঘাতক চক্র বার বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে নানাভাবে বিশৃংখলার চেষ্টা চালিয়ে এই অপশক্তি। এরা বারবার শোকের মাস আগস্টকে বেচে নিয়ে গভীর ষঢ়যন্ত্র ও নীল নশকা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে হবে। আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করে সকল ষঢ়যন্ত্র রুখতে হবে। তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে সবাইকে তাঁর আদর্শ ধারণ ও লালন করতে হবে।’
আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শাহাদাতবরণকারীর আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সুনামগঞ্জ পৌরবিপণি মসজিদের ইমাম মাও. হুসাইন আহমদ। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শহরে একটি শোকর্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।
আলোচনা, দোয়া মাহফিল ও শোক র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল গনি ভান্ডারী, নুর হাসান, ফরিদ আহমদ, সাজিদুর রহমান, জামালগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহবায়ক সামছুল আলম, জালাল মিয়াসহ দিরাই, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর ও পৌর কৃষক লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতকার্মীগণ।