হাবিবুল্লাহ হেলালী, বিশেষ প্রতিনিধি:
নরসিংদীর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেলাবো উপজেলার দড়িকান্দি নামক স্থানে যাত্রীবাহী বাস ও লেগুনার সংঘর্ষে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের একই পরিবারের ৫ জনসহ ছাতক- দোয়ারার বিভিন্ন গ্রামের ৮জন নিহত হয়েছেন। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই নির্মাণ শ্রমিক। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে তারা বাড়ি ফিরছিলেন।
হতদরিদ্র পরিবারের সঙ্গে তাদের ঈদ করার কথা ছিল। এখন পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ মাহমুদ এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভৈরব থেকে মহাখালীগামী ‘ঢাকা বস’ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে লেগুনা ও বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৮ ব্যক্তি নিহত হন। আহতদের জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ও আরেকজন হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওসি আরও জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌছে নিহতদের উদ্ধার করেন।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম জানান, বাস-লেগুনার সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ৮ ব্যক্তি ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে একজন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়।
জানা গেছে নিহতদের মধ্যে দোয়ারাবাজার উপজেলার গিরিশনগর গ্রামের একই পরিবারের স্বামী স্ত্রীসহ ৫জন রয়েছেন। তারা হলেন সুজন মিয়া, তার স্ত্রী সাবিনা বেগম, তাদের আত্নীয় মনোয়ার হোসেন, শাহিন ও সুমন।
এছাড়াও ছাতকের ছুরিগাওয়ের ১জন এবং একই উপজেলার আলীনগর গ্রামের আরো দুজন বলে জানা গেছে। সবার লাশ বাড়িতে আসবে আজ সন্দ্যায়। রাতেই জানাজা শেষে দাফন করা হবে। গ্রামে সারি সারি কবর খুড়া হচ্ছে।
এদিকে নিহতদের পরিবারে কান্নার রোল ওঠেছে। বারবার মূর্ছা যাচ্চেন সুজনের মা রাহেলা বেগম। বাড়িতে প্রতিবেশিরা এসেও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন। নিহতের স্বজনরা জানান নিহতরা সোমবার একটি লেগুনাযোগে ভৈরব এসে ছাতকী বাসে বাড়ি আসার কথা ছিল। তারা নরসিংদীতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশিদ বলেন, একই পরিবারেন ৫জনসহ আমাদের উপজেলার ৭জন মারা গেছেন। বাকিরা অন্যান্য স্থানের। তাদের লাশ বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওয়ান দিয়েছে। তাদের দাফনের জন্য স্বজনরা কবর খুড়ছেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।